Sunday, April 2, 2017

কেএলে কয়েক মাস - ৩

কয়েক হপ্তা পরে ফিরে এলাম ব্লগে। কাজের চাপ চলছে ভালোই আর উইকেন্ডেও ঘুরে বেরাচ্ছি তাই ব্লগ নিয়ে আর বসা হয়নি। এর মধ্যে বাতু কেভস আর কিনারা ওভাল ঘুরে এলাম।

বাতু কেভস হল চূনাপাথর বা লাইমস্টোনের অনেকগুলো গুহা। কুয়ালালামপুর সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে ট্রেনে ৪৫ মিনিট লাগল পৌঁছতে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ যখন ট্রেন থেকে নামলাম তখন পুরোদমে বৃষ্টি হচ্ছে। মিনিট দশেক দাঁড়ানোর পর বৃষ্টি একটু কমলে স্টেশন থেকে বেরোলাম। স্টেশনের গায়েই বাতু কেভসের গুহা। বড়জোড় ২০০-৩০০ মিটার হবে।
সামনে একটা উঠোন মত জায়গা, সেখানে দোকানপাট বেশ কিছু ছোট মন্দির আর মুরুগনের ১৪০ ফুট লম্বা স্ট্যাচু, বিশ্বের উচ্চতম মুরুগন মূর্তি। মুরুগন দক্ষিণ ভারতীয় দেবতা, যদ্দুর জানি কার্তিকেরই আর এক নাম। মূর্তির পাশ দিয়ে উঠে গেছে ২০০টা সিঁড়ি, তার ওপরে মন্দির। কেউ যদি মন্দিরে যাওয়ার প্ল্যান বানিয়ে আসেন তাহলে ফুল প্যান্ট বা গোড়ালি অবধি ঢাকা পোষাক পড়ে আসাটা জরুরি। না এলেও চাপ নেই, সিঁড়ির নিচে রংবেরঙ্গের কাপড় পাওয়া যায় কোমরে বাঁধার জন্য।
বাতু কেভসের প্রধান তিনটে গুহা হল, মন্দির কেভ, ডার্ক কেভ আর রামায়ণ কেভ।
এগুলোর মধ্যে ডার্ক কেভই সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং। গুহার মধ্যে প্রায় হাফ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ট্যুর হয় (দক্ষিণা ৩৫ রিঙ্গিট) গ্রুপে, সঙ্গে গাইডও থাকে। আমাদের সঙ্গে ছিল জাফ। ভালোই গল্প করতে করতে নিয়ে গেল। গুহা ভর্তি বাদুর, এছাড়া একটা বেশ বিষাক্ত সাপ দেখলাম দেওয়ালের ধারে, এছাড়া অনেকগুলো পাওয়ালা বিছের মত একটা প্রানী আর মাকড়সাও দেখলাম। তার সঙ্গে বহু ধরণের ভৌগলিক গঠন দেখলাম নিজের চোখে বিশেষ করে ৪০ কোটি বছরের স্ট্যালাক্টাইটস আর স্ট্যালাগ্মাইটস চোখে পড়ল অনেক জায়গায়, সেগুলো বেশ ইউনিক।
মন্দির কেভ পুরোটাই বাঁধানো, বেশ বড় মন্দির, দানের পাত্র, পুজোর সামগ্রীর দোকান সবই আছে। মন্দিরের চারদিকে পাহাড় উঠে গেছে। ওপরটা খোলা, বেশ সুন্দর।
রামায়ন কেভটা আর কিছুই নয় একটা গুহার ভেতরে রামায়নের বিভিন্ন ঘটনা মূর্তি দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। সেরকম আহামরি কিছু নয় যদিও টিকিট মাত্র ৫ রিঙ্গিট।


মোটামুটি দু ঘন্টায় বাতু কেভসের আশপাশ দেখে ফিরে গেলাম কে এলে। পরের পোস্টে লিখছি কিনারা ওভালের গল্প।

No comments:

Post a Comment

"It’s always very easy to give up. All you have to say is ‘I quit’ and that’s all there is to it. The hard part is to carry on”